শাহানা হুদা রঞ্জনা:
আমাদের সন্তানরা হারিয়ে যাচ্ছে মায়ের কোল থেকে, বাবার সান্নিধ্য থেকে, পরিবার ও সমাজ থেকে। শিক্ষা, আনন্দ, খেলাধুলা ও ভালোবাসা থেকেও। এদের অনেকের চোখেই কোনো স্বপ্ন নেই। সুস্থ চিন্তা ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার কথা এরা ভাবেও না। নিজের প্রতি, পরিবার, সমাজ, দেশ কারও প্রতিই কোনো টান বা দায়িত্ব নেই।
হারিয়ে কোথায় যাচ্ছে এরা? গল্পে যেমন পড়েছি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার পেছনে শহরের সব শিশু-কিশোর দলবেঁধে ছুটে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি আমাদের সন্তানরা অপরাধ জগতের দিকে ছুটে যাচ্ছে। অপরাধ জগতের এই ছেলেধরারা যেমন আমাদের সন্তান, তেমনি এরা ছিনিয়ে নিচ্ছে আমার-আপনার সন্তানকে। আমরা এখন এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছি যে, সবকিছু বুঝতে পারলেও কিছু করতে পারছি না। পারছি না সন্তানকে গর্তে পড়ে যাওয়া থেকে আটকাতে।
‘গডফাদার’ নামের বাঁশিওয়ালার পেছনে চলতে চলতে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা। এই হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা যখন শুরু হয়েছিল, আমরা কখন কেয়ার করিনি, সচেতন হইনি। এ অবস্থা বাড়তে বাড়তে এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে অসংখ্য বাবা-মা ঝাপসা চোখে, ভাঙা দেহ নিয়ে শূন্য গৃহে বসে আছেন, আর তাদের সন্তানরা হারিয়ে যাচ্ছে অপরাধ জগতে। প্রতিদিন ‘কিশোর গ্যাং’ সংক্রান্ত যেসব খবর আসছে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সেগুলো সব পিলে চমকানোর মতো। পুরো সমাজ এখন ওদের হাতেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই লক্ষ্য করছি। বিগত সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভয়ংকর সব অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ‘কিশোর গ্যাং’র সদস্যরা।
শিক্ষিত, সচ্ছল ও ধনী পরিবারের বেপরোয়া বা বখাটে সন্তানরা চালিত হচ্ছে লেখাপড়া না জানা কিছু মাস্তানদের দ্বারা। শিশু-কিশোররা ইউটিউব, টিকটক, ভায়োলেন্ট গেমস, বুলি করা ও পর্নোগ্রাাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এসব আসক্তিই মূলত তাদের মধ্যে ডেভিয়েন্ট বিহেভিয়ার বা সমাজবহির্ভূত আচরণকে প্ররোচিত করে।
ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, নারীদের উত্ত্যক্ত করাসহ আরও অনেক অপরাধ। অথচ ১০-১২ বছর আগেও পাড়া-মহল্লাকেন্দ্রিক অপরাধের ঘটনায় নাম আসতো কোনো না কোনো সন্ত্রাসী বাহিনীর। এখন সে জায়গা ‘দখল’ করেছে কথিত কিশোর গ্যাং। দেশের যে কোনো এলাকায় এ ধরনের অপরাধ ঘটলে অনেক বেশি হারে ‘কিশোর গ্যাং’র নাম আসছে। সরকারের একটি সংস্থা ২০২৪ সালের এপ্রিলে কিশোর গ্যাংগুলোর তৎপরতা নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদনে বলেছে যে দেশে ২৩৭টির মতো ‘কিশোর গ্যাং’ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা শহরে, ১২৭টি। আমার আশঙ্কা এপ্রিল ২০২৫ এ এই সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে, অন্তত সার্বিক পরিস্থিতি সেকথাই বলে।
বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে কিশোর গ্যাং চক্র গড়ে উঠছে; যারা খুন ও ধর্ষণের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে। নিজেদের মধ্যেও সংঘর্ষ-মারামারিতে জড়াচ্ছে এরা। জেলা শহরগুলোতেও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২৩ সালে ডিএমপির সূত্র বলেছে রাজধানীতে যত খুন হয়েছে, তার ২৫টি কিশোর গ্যাং-সংশ্লিষ্ট। এর অর্থ হচ্ছে, বিভিন্ন গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজ এলাকায় প্রভাব বাড়াতে এক পক্ষ আরেক পক্ষের সঙ্গে ভয়ংকর সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতার সুযোগে ও বড় সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়ে এরা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মানুষের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে গ্যাংগুলো। কিশোর গ্যাংকে যারা সৃষ্টি করেছে, ব্যবহার করেছে, তারা সবাই সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে এবং এখনো তেমনটাই আছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, একই পাড়া-মহল্লার বাসিন্দা অথবা বখে যাওয়া কিশোর-তরুণরা এক জোট হয়ে বাহারি ও চটকদার নামে কিশোর গ্যাং তৈরি করে।
‘হিরোইজমের’ চিন্তাভাবনা থেকে কিশোরদের মধ্যে ‘গ্যাং’ কালচার শুরু হলেও তারা এখন ভয়ংকর সব অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। রাজনৈতিক দল, পুরোনো অপরাধী বড় ভাইদের আশ্রয় পাওয়ার ফলে কিশোরেরা নিজেদের ক্ষমতাবান মনে করছে এবং সংঘবদ্ধ অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর উত্তরায় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে স্কুলছাত্র আদনান কবিরকে সমবয়সী কিশোরেরা খেলার মাঠে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। মূলত এরপরই কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতার বিষয়টি প্রথম সবার নজরে আসে। কিশোর গ্যাং সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি জানা যায় ২০১৯ সালে।
ওই বছরের জুন মাসে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফ নামের এক যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও তখন সারাদেশে ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়েছিল। কিন্তু ঘটনাগুলোকে কেবল বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করা হয়েছে, তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কিন্তু অপরাধী চক্র ঠিকই বুঝতে পেরেছে এই শিশু-কিশোররা সংখ্যায় অনেক, এদের অনেকের অভাব-অনটন তীব্র, পরিবারে স্নেহ-ভালোবাসা ও যত্নের মানুষ নাই। ধনীর সন্তানদের একটা অংশ বখে যাওয়া, এদের হাতে অনেক টাকা এবং এসব পরিবারেও দেখাশোনার কেউ নাই। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অপরাধী চক্র এগিয়ে এসেছে মাদক, পর্নোগ্রাফি ও অস্ত্র নিয়ে। কিশোরদের প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলা সহজ। ওরা তাই করেছে।
আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে স্কুল-কলেজে কিশোর অপরাধের মাত্রা ও ধরনধারণে পরিবর্তন এসেছে। তাদের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এই সেদিন কুমিল্লায় অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া তৎপরতায় শহরজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল, তা এখনো রয়ে গেছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার দিন এক থেকে দেড়শ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য অস্ত্র নিয়ে শহরে মিছিল করে। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। আতঙ্কিত এক অভিভাবক বলেন, “মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল, আমরা বাইরে অপেক্ষা করছি। এমন সময় অন্তত ৫০০ পোলাপান হাতে চাপাতি, বঁটি, দা নিয়ে মহড়া দিচ্ছিল। এটা আতঙ্কের বিষয়। অথচ এখানে প্রশাসনের কোনো লোকজন নেই, প্রশাসন কোথায় গেলো? এমন পরিস্থিতি কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।” স্থানীয়রা বলছেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে এই কিশোর গ্যাং সদস্যদের দৌরাত্ম্য অনেক বেড়েছে। কিন্তু এদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। নানান অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় ‘বড় ভাই’রা। আন্ডারওয়ার্ল্ডের হত্যা, বডি লোপাট, আগুনে পোড়ানোর ঘটনায়ও কিশোরদের ব্যবহার করার ঘটনাও ঘটেছে।
শিশু অপরাধ বিষয়ক গবেষকরা মনে করেন, অপরাধে জড়িয়ে পড়া শিশুদের সামাজিক বন্ধন খুব দুর্বল থাকে। এই সামাজিক বন্ধনহীনতা একধরনের সমস্যা তৈরি করে। এদের অনেকেই মা, বাবা ও পরিবারের ভালোবাসা, যত্ন ও মনোযোগ না পেয়ে অনাদরে অবহেলায় বড় হয়। আদর্শিক জায়গা থেকে তাদের সামনে কোনো ‘রোল মডেল’ থাকে না। শিশু-কিশোর অপরাধীদের অধিকাংশের বয়সই ১৪ থেকে ১৮ এর মধ্যে। এদের মধ্যে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানরা যেমন আছে, তেমনি আছে নিম্নবিত্ত ঘরের নিরক্ষর কিশোর-তরুণরাও। আর এরাই মূলত নেতৃত্বে আছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কিশোররা দেখে অপরাধীরা হিরো। তারা দেখে বড়রা নানান অপরাধ করে ক্ষমতাবান হচ্ছে। ফলে তারাও সেই পথে যায়, তারাও গ্যাং গঠন করে নিজেকে ক্ষমতাবান করতে চায়, হিরো হতে চায়।’
রাজনৈতিক গডফাদাররা শক্তি দেখাতে, মাদক ব্যবসা করতে এবং ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেই কিশোর গ্যাং তৈরি করে। এখন এদের নেতৃত্বে রয়েছেন জেল থেকে ছাড়া পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। এই সন্ত্রাসীরা কিশোর গ্যাংকে অপরাধ জগতে তাদের সেতু হিসেবে ব্যবহার করে। কিশোর গ্যাং পাড়া-মহল্লা থেকে খোঁজখবর এনে দেয়। তাদের অস্ত্র ও সাহস জোগায় জেলখাটা কয়েদিরা। ব্যস এভাবেই চক্রটি অপরাধ ঘটাতে শুরু করে।
এক্ষেত্রে শিশু-কিশোরকে রক্ষা করার দায়িত্ব পরিবারের। অথচ বাবা-মা তাদের ব্যস্ততা ও অসচেতনতার কারণে ব্যক্তিগতভাবে সময় দেন না। এই সময় দিতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে সন্তানের হাতে তুলে দেন অপরিমিত অর্থ, প্রাচুর্য ও ব্যাপক স্বাধীনতা। এই প্রশ্রয় সন্তানকে করে তোলে বেপরোয়া, দুর্বিনীত ও অপরাধী। বখে যাওয়া শিশু-কিশোররা যেমন সহজে মন্দ পথে পা বাড়ায়, তেমনি অপরাধীরাও খুব সহজে তাদের ব্যবহার করার সুযোগ পায়।
আজকাল অভিভাবক সন্তানের হাতে খুব সহজেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ডিভাইস তুলে দিচ্ছেন। শিশু-কিশোররাও যে কোনোভাবে তা সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। কারণ এগুলোর মাধ্যমে তারা টিকটক, পাবজি, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও লাইকি ব্যবহার করে। এবং একে কেন্দ্র করেও নতুন করে গ্যাং গড়ে তোলে। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) সম্ভবত ২০২৩ সালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল বিভিন্ন সময় আটক কিশোররা বলেছে ভিডিও গেমস খেলতে খেলতে তাদের মধ্যে অস্ত্র চালানো শেখার ইচ্ছা জেগেছে। এরপরই জঙ্গিগোষ্ঠীর খপ্পরে পড়ে তারা ঘর ছাড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ গবেষক তৌহিদুল হক সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যখন দেখে তাদের ব্যবহারকারীরা গণ্যমান্য, পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা করেন তখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের বয়স কম হওয়ায় তারা পরিণতির কথা চিন্তা না করে যে কোনো ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এটা এখন আমাদের একটি বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।
প্রায় ২০-২২ বছর আগেও আমরা পাড়া-মহল্লায় যে শিশু-কিশোর মাস্তানদের দেখেছি, তারা পাড়ার রকে বসে আড্ডা দিতো, পাড়ার মেয়েদের দেখে গান গাইতো, আম-পেয়ারা পেড়ে খেয়ে ফেলতো, সিগারেট-বিড়িতে টান দিতো। এরপরেও সেই মাস্তানদের দেখেছি মুরুব্বিদের সামনে সিগারেট লুকিয়ে ফেলতে, সালাম দিতে, পাড়ায় কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে, কোন বাড়িতে কেউ মারা গেলে সেখানে গিয়ে দায়িত্বপালন করতে।
এখন দেখছি এদের সবারই উদ্ধত আচরণ, বেয়াদবি, পড়াশোনার প্রতি বিদ্বেষ, গুরুজনকে অসম্মান করা ও দায়িত্বপালন না করা। আজকের কিশোর অপরাধীদের মধ্যে একধরনের ভয়াবহতা লক্ষ করা যাচ্ছে। নিম্নবিত্ত ঘরের পড়াশোনা না জানা কিশোর-তরুণরা আছে নেতৃত্বে। শিক্ষিত, সচ্ছল ও ধনী পরিবারের বেপরোয়া বা বখাটে সন্তানেরা চালিত হচ্ছে লেখাপড়া না জানা কিছু মাস্তানদের দ্বারা। শিশু-কিশোররা ইউটিউব, টিকটক, ভায়োলেন্ট গেমস, বুলি করা ও পর্নোগ্রাাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এসব আসক্তিই মূলত তাদের মধ্যে ডেভিয়েন্ট বিহেভিয়ার বা সমাজবহির্ভূত আচরণকে প্ররোচিত করে। প্রথমে স্কুলে পড়তে গিয়ে বা পাড়ায় আড্ডা দিতে গিয়ে মজা করার জন্য এই গ্রুপ তৈরি হলেও একসময় মাদক, অস্ত্র এমনকি খুনোখুনিতেও জড়িয়ে পড়ছে।
এরা যখন বন্ধুদের মাধ্যমে কিশোর গ্যাংগুলোতে ঢুকছে এবং মাদক ও অস্ত্রের জোগান সহজেই পেয়ে যাচ্ছে, তখন তাদের পক্ষে অপরাধপ্রবণ হওয়াটাই স্বাভাবিক। শিশু থেকে তরুণ-যুবার এই আচরণ একধরনের অসহিষ্ণু সমাজের কথা বলছে। যে সমাজে ‘সামাজিক বন্ধন’ বলে কিছু নেই। এই গ্যাংয়ে জড়িয়ে পড়া যতটা সহজ, বেরিয়ে আসা ততটা নয়। পরিবেশ পরিস্থিতিও এই থেকে বেরিয়ে আসার অনুকূলে নয়। ফলে সামনের দিনগুলো নিকষ কালো, যদি না আমরা এক্ষুণি হাল না ধরি।
লেখক : যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক।