এরশাদুল বারী :
দেশের রাজনীতিতে কী ঘটতে যাচ্ছে আগামী ৩১ ডিসেম্বর এ নিয়ে রাজনীতির অন্তর্মহলে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সেই সাথে আলোচনা আর সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোত। বিশেষ করে ফেসবুকে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুথানে ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পাঁচ মাসের মাথায় সম্প্রতি সচিবালয়ে ঘটে যাওয়া রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নড়েচড়ে বসেছে সরকার।
ওই ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে আলোচনায় উঠে আসে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি। এরপর শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৩১ ডিসেম্বরে শহীদ মিনারে বিপ্লবী সরকারের ঘোষণাপত্র নিয়ে একের পর এক রহস্যজনক স্ট্যাটাস দিতে থাকেন ৫ আগস্টেরর পট পরিবর্তনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। এসব স্ট্যাটাসকে ঘিরেই মূলত জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর?
ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ছাত্র নেতাদের স্ট্যাটাসগুলো নিন্মে হুবহু তুলে ধরা হলো :
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘এ বছরই হবে। ৩১ ডিসেম্বর। ইন শা আল্লাহ!’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন ‘Comrades, 31st DECEMBER! Now or Never.’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রিফাত রশিদ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন ‘All eyes on 31st December, 2024. Now or Never!’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন ‘Comrades Now or Never.’
এরপর তিনি কমেন্ট সেকশনে ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত দেন।
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে যুক্ত থাকা অন্যান্য সদস্যরাও একই বিষয় নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে যাচ্ছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক সূত্রে জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হতে পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আমল থেকে বের হয়ে দেশ কেন জুলাই বিপ্লবের রূপ নিল, কীভাবে নিল, ৯ দফা থেকে ১ দফায় আমাদের কেন আসতে হলো, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা কীরূপ ছিল- এসব বিষয় নিয়ে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র পাঠ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সমন্বয়ক বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় যেমন ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছিল তেমনই ৩১ ডিসেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।
আসিফ মাহমুদ ও হাসনাত আব্দুল্লাহও তাদের নতুন স্ট্যাটাসে ‘ঘোষণাপত্র’ পাঠের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হাসনাত লেখেন- ‘Proclamation of july revolution, 31st december, shahid minar- 3.00 pm’ একইভাবে আসিফ মাহমুদ লেখেন- ‘Proclamation of July Revolution’
ফেসবুকের এসব স্ট্যাটাসকে ঘিরেই মূলত শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, ৩১ ডিসেম্বর দেশের বর্তমান সংবিধান বাতিল করে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র পাঠ বা উন্মোচন করা হবে এবং একই সাথে ওইদিন গঠিত হতে পারে নতুন বিপ্লবী সরকার। তবে ঘোষণাপত্রে কি থাকছে বা কী ঘটতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে ৩১ ডিসেম্বরের আগে কেউ মুখ খুলছেন না।