নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়েম অনুষ্ঠিত হবে ইংরেজি ভাষাদক্ষতার জন্য প্রচলিত নিরীক্ষণপদ্ধতি ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম বা আইইএলটিএস। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাঁরা পড়তে ও অভিবাসনের জন্য যেতে চান, তাঁদের এ পরীক্ষা দিতে হয়।
নতুন নিয়ম সম্পর্কে বাংলাদেশে আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) এডুকেশন বলছে, আগে আইইএলটিএস পরীক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবে লিসেনিং ও রিডিং পরীক্ষায় পেনসিল ব্যবহার করতে হতো, রাইটিং অংশে পেনসিল বা কলমের মধ্যে যেকোনো একটি ব্যবহারের অনুমতি ছিল। কিন্তু এখন থেকে নতুন নিয়মের কারণে লিসেনিং, রিডিং ও রাইটিং তিন অংশের পরীক্ষাতেই বাধ্যতামূলকভাবে কলম ব্যবহার করতে হবে। কোনোভাবে পরীক্ষার্থীরা পেনসিল ব্যবহার করতে পারবেন না। ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি দুই প্রতিষ্ঠানেরই পরীক্ষার্থীদের জন্য আগামী ২৫ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে এই নিয়ম কার্যকর হবে। একাডেমিক ও জেনারেল আইএলটিএসে দুই ক্ষেত্রেই এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়ত্র ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে আনতে পারবেন না। কেন্দ্রে প্রার্থীদের কলম দেবে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি।
আইডিপি আইইএলটিএসের প্রধান ইলোরা শাহাব শর্মী গণমাধ্যমকে জানান, ‘পরীক্ষায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি প্রার্থীদের জন্য ভালো হবে। আমরা আমাদের কর্ম বা শিক্ষাজীবনের সব ক্ষেত্রেই কলম ব্যবহার করি। কলমের সঙ্গে প্রার্থীদের ইরেজার বা শার্পনার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। পেনসিল ধারালো করা বা লেখা মুছে ফেলার জন্য পরীক্ষায় যথেষ্ট সময় ব্যয় হয়। তাই কলম ব্যবহারের ফলে সময় বাঁচবে এবং প্রার্থীরা উত্তর তৈরিতে সেই সময় কাজে লাগাতে পারবেন। এটি একটি নতুন নিয়ম এবং এটি অনেক দেশেই দেওয়া হচ্ছে।
তবে নতুন এ নিয়মের কারণে পরীক্ষার্থীরা কিছুটা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে মনে করছেন আইইএলটিএসের বাংলাদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মতে, আইইএলটিএস লিসেনিং, রিডিং ও রাইটিং অংশে পেনসিলের ব্যবহার সুবিধাজনক। কারণ, ভুল করলে সঙ্গে সঙ্গে রাবার দিয়ে মুছে ফেলে ঠিক করা যায়। কিন্তু কলম ব্যবহারের ফলে ভুল করলে কেটে দিতে হবে, ঠিক করে লেখার জায়গা পাওয়া যাবে না।
আইইএলটিএসের শিক্ষক ও পেট্রোনাস এডুকেশনের পরিচালক মোস্তাকিম শুভ গণমাধ্যমকে জানান, সার্বিকভাবে কলমের ব্যবহার পরীক্ষার্থীদের জন্য অসুবিধার। যেমন লিসেনিং ও রিডিং পরীক্ষায় খুব অল্প জায়গায় উত্তর লিখতে হয়, অনেক সময় উত্তর পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে। পেনসিল ব্যবহারের কারণে পরীক্ষার্থীরা সহজে তা মুছে সঠিক উত্তর লিখতে পারতেন। কিন্তু কলম ব্যবহারের ফলে পরীক্ষার্থীরা এ সুবিধা পাবেন না। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন রাইটিং অংশে। সেখানে নতুন কোনো ভোকাবুলারি অথবা কোনো কারেকশন মুছে করতে গেলে বড় সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ, কলম দিয়ে লেখার ফলে মুছতে পারবে না, কাটাকাটি করতে হবে, কাটাকাটির পর নতুন শব্দ লেখার জায়গা থাকবে না। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষার্থী যে কলম দিয়ে লিখবেন, সেটি টেস্ট সেন্টার প্রোভাইড করবে। ফলে সেই কলমে শিক্ষার্থীরা অভ্যস্ত না–ও থাকতে পারেন। এতে লেখার গতি কমে যাবে এবং অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে রাইটিং শেষ করতে সমস্যায় পড়তে পারেন। তবে এ সমস্যা সমাধানে যদি আইডিপি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রতিটি অংশে অতিরিক্ত উত্তরপত্রের ব্যবস্থা করে, তাহলে শিক্ষার্থীরা এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।