এরশাদুল বারী, কোপেনহেগেন থেকে: ১৬ টি দেশের নাগরিকদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট নীতিমালা শিথিল করল ডেনমার্ক সরকার। এর ফলে এখন থেকে ‘পে লিমিট ওয়ার্ক পারমিট স্কিমের’ অধীনে যেকোন ড্যানিশ কোম্পানি থেকে বার্ষিক তিন লাখ ক্রোনা (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনের চাকরির নিয়োগপত্র দিয়ে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ডেনমার্কে কাজের সুযোগ পাবেন।
এতো দিন বার্ষিক কমপক্ষে ৫ লাখ ১৪ হাজার ড্যানিশ ক্রোনা (ট্যাক্স বহির্ভূত) বেতনের চাকরির অফার ছাড়া কেউ ডেনমার্কে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদনের সুযোগ ছিল না।
সোমবার ডেনমার্ক সরকারের কর্মসংস্থান মন্ত্রী এ্যানে হ্যালসবয় ইয়োনসেন এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই নীতিমালা ঘোষণা দিয়ে বলেন, এটা ড্যানিশ শ্রম মডেলের জন্য একটি নতুন অঞ্চল।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ এশিয়ার দেশ চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারতের মতো দেশ থাকলেও নতুন এই তালিকায় নেই বাংলাদেশ।
এই নীতিমালা পরিবর্তনে মাধ্যমে এবং নতুন পে লিমিট ওয়ার্ক পারমিট স্কিমের’ অধীনে ডেনমার্ক সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এই ১৬ টি দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষকে ডেনমার্কের লেবার মার্কেটে কাজে লাগাতে চান।
এর আগে গত শুক্রবার এ বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং সোমবার সেটি চূড়ান্ত করে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়। এখন যেকোনো সময় ড্যানিশ সংসদে এই বিলটি পাশের মাধ্যমে সেটি কার্যকর করা হবে বলে এমনটিই জানিয়েছে সুত্রগুলো।
নতুন এই নীতিমালার মাধ্যমে এই ১৬ টি দেশের যেকোন নাগরিক যদি ড্যানিশ কোন কোম্পানি থেকে ন্যূনতম বার্ষিক তিন লাখ ক্রোনা বেতনের চাকরির নিয়োগপত্রসহ ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করেন তাহলে সে সহজেই ডেনমার্কে ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা পাবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এই ১৬ টি দেশ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, ব্রাজিল মালয়েশিয়া মন্ত্রীগ্র , সার্বিয়া, উত্তর ম্যাচেডোনিয়া, আলবেনিয়া, ইউক্রেন এবং মলদোভা। তবে এই তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকায় ডেনমার্কে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা হতাশ হয়েছেন।
তবে অনেকেই ধারণা করছেন ইতিপূর্বে ড্যানিশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মেটে ফেডেরিকসেন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো থেকে বৈদেশিক জনবল নিয়োগের যে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছিলেন হয়তো বা সেটার প্রভাব পড়েছে এই তালিকায় বাংলাদেশ না থাকার পেছনে। তবে এ নিয়ে কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া ড্যানিশ সরকারের পক্ষ থেকে।
বর্তমানে ডেনমার্কের লেবার মার্কেটে প্রায় চার লাখেরও বেশি বৈদেশিক জনবল নিয়োজিত রয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়ানোর জন্যই ড্যানিশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে সংবাদ সম্মেলনে ড্যানিশ সরকারের অর্থমন্ত্রী স্টেফানি লোজ বলেন, নতুন এই নীতিমালা ভবিষ্যতে স্থগিত করা হতে পারে যদি ড্যানিশ শ্রম বাজারে মন্দাভাব সৃষ্টি হয় এবং বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কেননা আমাদের অনেক ড্যানিশ শ্রমজীবী মানুষ বর্তমানে চাকরির জন্য উপযুক্ত রয়েছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডেনমার্কে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার মুহাম্মদ সাকিব সাদাকাত বিষয়টি সম্পর্কে তার বিস্তারিত ধারনা নেই বলে জানান।