নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় শতভাগ সরকারি অর্থায়ন অর্থাৎ বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন। এছাড়া সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি পর্যায়ের চিকিৎসাসেবায় হাইব্রিড অর্থায়ন মডেল চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। যেন সাধারণ মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত চিকিৎসাসেবা পেতে পারে।
হাইব্রিড অর্থায়ন মডেল চালু হলে সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি সেবায় সমতা, সক্ষমতা ও আর্থিক সুরক্ষা বৃদ্ধি পাবে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করা হয়।
গত বছরের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন, স্বাস্থ্য, নারীবিষয়ক সংস্কারে বিভিন্ন নামে কমিশন গঠন করে সরকার।
২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। গত ৫ মে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। কমিশনের প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি ন্যায্য, প্রতিক্রিয়াশীল ও আর্থিকভাবে সুরক্ষিত স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে শতভাগ সরকারি অর্থায়নের মাধ্যমে সর্বজনীন ও বিনামূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে একটি করভিত্তিক অর্থায়ন কাঠামো গ্রহণ করা প্রয়োজন, যেখানে মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য, টিকাদান, সাধারণ রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা রাজস্ব থেকে অর্থায়িত হবে। মূলত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে।
এই মডেল চালু হলে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তি পর্যায়ের ব্যয় কমবে। পাশাপাশি নাগরিকরা আয়, অঞ্চল বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে প্রয়োজনীয় সেবার ন্যায্য অধিকার লাভ করবে।