পড়ালেখা ডেস্ক:
২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা আরও বাড়বে। উন্নত শিক্ষা, বৈশ্বিক স্বীকৃতি ও আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার সম্ভাবনার কারণে বিদেশে পড়াশোনা অনেক শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন। চলুন দেখে নেওয়া যাক, ২০২৫ সালে কোন কোন দেশ উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্র: বরাবরের মতোই শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার প্রথম দিকে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ হাজারের বেশি, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। উল্লেখযোগ্য বৃত্তি: ফুলব্রাইট স্কলারশিপ, রোটারি পিস ফেলোশিপ, হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রাম, এডিবি-জাপান স্কলারশিপ ইত্যাদি।
সুবিধা
বিশ্বমানের শিক্ষা। রয়েছে উচ্চ মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বৈচিত্র্যময় একাডেমিক প্রোগ্রামে প্রবেশের সুযোগ।
কোনো একটা কোর্সে থিতু হওয়ার আগে অন্য কোর্সের ক্লাস করে মেধা যাচাইয়ের সুযোগ। উন্নত মানের গবেষণার সুবিধা। আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার ও স্নাতকের পর এক বছরের জন্য ‘অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং’-এর সুবিধা।
অসুবিধা
এখানে পড়াশোনার খরচ অনেক বেশি। বার্ষিক টিউশন ফি ২৪ হাজার থেকে ৭২ হাজার ডলার। প্রধান শহরগুলোতে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি। স্কলারশিপের সুযোগ সীমিত। একাডেমিক চাপ রয়েছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই আইইএলটিএস ছাড়াই প্রোগ্রাম অফার করে। উল্লেখযোগ্য বৃত্তি: শেভনিং স্কলারশিপ, কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপ, গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপ ইত্যাদি।
সুবিধা
স্নাতকের পর তাদের ‘গ্র্যাজুয়েট রুট’ সুবিধা আপনাকে ২ বছর (পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ বছর) যুক্তরাজ্যে চাকরির জন্য থাকতে দেবে। বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৈশ্বিক স্বীকৃতি আছে এমন কোর্স কম সময়ের প্রোগ্রাম (ব্যাচেলর ৩ বছর, মাস্টার্স ১ বছর)।
অসুবিধা
টিউশন ফি অনেক বেশি। বছরে ১২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার ইউরো। মূল শহরগুলোতে জীবনযাত্রার ব্যয় অত্যন্ত বেশি। ভিসার নিয়মাবলি কঠোর।
কানাডা
কানাডা তার বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ এবং উন্নত জীবনযাত্রার মানের জন্য পরিচিত। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তুলনায় সাশ্রয়ী শিক্ষার সুযোগ দেয়। উল্লেখযোগ্য বৃত্তি: পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো স্কলারশিপ, ভ্যানিয়ের কানাডা গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ ইত্যাদি।
সুবিধা
স্নাতকের পর ৩ বছর পর্যন্ত কানাডায় কাজ করার সুযোগ, যা সেখানে স্থায়ী বসবাসের পথ সহজ করে। শিক্ষার্থীবান্ধব শহর। তুলনামূলক মাঝারি খরচে উচ্চমানের শিক্ষা। শক্তিশালী অভিবাসনব্যবস্থা।
অসুবিধা
স্নাতক প্রোগ্রামের জন্য বার্ষিক ব্যয় গড়ে ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ১৬ হাজার কানাডিয়ান ডলার। অনেক অঞ্চলের তীব্র শীত বাংলাদেশিদের জন্য কঠিন হতে পারে। প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজার।
অস্ট্রেলিয়া
অন্য দেশগুলোর তুলনায় অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে যাওয়ার জন্য ভিসা পাওয়া সহজ। দেশটির বড় বড় শহরে রয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
উল্লেখযোগ্য বৃত্তি: অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ, অস্ট্রেলিয়ান গভর্নমেন্ট রিসার্চ ট্রেনিং প্রোগ্রাম, মেলবোর্ন রিসার্চ স্কলারশিপ।
সুবিধা
বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও একাডেমিক প্রোগ্রামের বিশেষ ব্যবস্থা। পড়াশোনার পর ২ থেকে ৪ বছর কাজের অনুমতি।
অসুবিধা
অধিক টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার অতিরিক্ত খরচ। বাংলাদেশ থেকে ভৌগোলিক দূরত্ব অনেক বেশি, যা যাতায়াতের খরচ বাড়িয়ে দেয়। কঠোর অভিবাসন নীতি।
জার্মানি
বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণার অন্যতম আঁতুড়ঘর হিসেবে জার্মানি বিশেষভাবে পরিচিত। এ ছাড়া সারা পৃথিবীতেই জার্মানির ডিগ্রির কদর রয়েছে। এই দেশ শিক্ষাসহ নানা দিক দিয়ে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয়।
উল্লেখযোগ্য বৃত্তি: ডাড স্কলারশিপ, হামবোল্ট রিসার্চ ফেলোশিপ, ফ্রেডরিক ইবার্ট ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ইত্যাদি।
সুবিধা
কম বা বিনামূল্যে টিউশন ফি। শক্তিশালী ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তিগত প্রোগ্রাম। পড়াশোনা-পরবর্তী কাজের সুযোগ।
অসুবিধা
দৈনন্দিন জীবনে জার্মান ভাষার প্রয়োজন। উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়। প্রতিযোগিতামূলক ভর্তিপ্রক্রিয়া। সূত্র: এডুকেশন বোর্ড