নিজস্ব প্রতিবেদক :
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ইসলামে ভেদাভেদের কোনো স্থান নেই। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এক উম্মাহ। বিশ্বের যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত, সেখানেই তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে- এটাই ইমানের দাবি। শনিবার রাতে মাদরাসা ফয়জুল উলুম আজিমপুর ঢাকার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এনব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মুসলমানদের মধ্যে কোনো বিভেদ থাকার সুযোগ নেই। দুঃখের বিষয় সারা বিশ্বে ২০০ কোটির বেশি মুসলমান, কিন্তু তাদের মধ্যে ঐক্য নেই। এর ফলে বিভিন্ন জনপদে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছেন। গত ১৫ মাস ধরে ইহুদিরা ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও চীনের উইঘুর, মিয়ানমারের আরাকানে, ভারতের কাশ্মীরসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলমানরা জুলুমের শিকার। মুসলিম বিশ্বকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বয়ান করেন- দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মুফতি আল্লামা হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী, মুফতি আব্দুল আউয়াল, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মুফতি মুশতাকুননবী কাসেমী, লালবাগ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী।
প্রথমদিনে বয়ান করেন- আল্লামা মুফতি আব্দুল মান্নান, মুফতি দিলাওয়ার হুসাইন, মুফতি জাফর আহমাদ, মুফতি উবায়দুল্লাহ হামজা ও মুফতি তানভীর আহমাদ সিদ্দিকী। সম্মেলনে কোরআন তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত শায়খ কারি আহমদ বিন ইউসুফ, শায়খ কারি নাজমুল হাসান ও শায়খ কারি সিদ্দিকুর রহমান, আলহাজ শেখ আবুল হাশেম ও ছাখাওয়াতুল্লাহ।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা হিন্দুত্ববাদী ভারতবেষ্টিত এবং সামান্য সীমান্ত মিয়ানমারের সঙ্গে, সেখানকার জনগোষ্ঠীও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। অথচ বাংলাদেশের মতো ছোট ভূখণ্ডে ৯০ শতাংশ মুসলমান। জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েই এ ভূখণ্ডের জনগোষ্ঠী হাজার বছর আগে ইসলামে তাদের অধিকার খুঁজে পেয়েছেন। তাই আমরা মহান আল্লাহর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
৫৩ বছর ধরে এদেশে ইসলাম-বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে তরুণদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে ভারতের দালাল, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিদায়ে রাষ্ট্র তার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে, আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি। আমাদেরও রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তায় শাহাদতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার গণহত্যার কথা তুলে ধরে সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, আর যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, এজন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে মাদরাসা ছাত্রদের অবদান ছিল অপরিসীম। ১০০ জনের মতো মাদরাসাছাত্র শহীদ হয়েছেন। ২০১৩ সালেও মাদরাসা ছাত্ররা জীবন দিয়েছেন হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে। কিন্তু তাদের অবদানের স্বীকৃতি খুব কমই দেখতে পাই।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে বাংলাদেশ নজরুল আবৃত্তি পরিষদ কর্তৃক চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের কবিতা-যুগল আবৃত্তিসন্ধ্যা অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন,বাঙালি সংস্কৃতির বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে কবিতা-সাহিত্য। জুলাই বিপ্লবে অন্য পেশার মানুষের পাশাপাশি কবি-সাহিত্যিক ও লেখকদের ভূমিকাও ছিল অনন্য। এ ধরনের আয়োজন করায় নাসিম আহমেদ ও শায়লা আহমেদ যুগলকে ধন্যবাদ জানান।