অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে এবং এটি তাদের টপ প্রায়োরিটি।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আগের সরকারের দুটি অগ্রাধিকার প্রকল্পে মোট ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের আট প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগও অনুসন্ধান করবে কমিশন।
গত ১৭ ডিসেম্বর এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরদিন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। এরপর গত রোববার শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ডলার পাচারের আরেকটি অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দল গঠনের বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
শফিকুল আলম আরও জানান, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোক গুম হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে কয়েক হাজার লোক। তিনি বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলোও গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে যে ধরনের অপরাধগুলো হয়েছে তা চিন্তা করা যায় না। পুরো পৃথিবী হঠাৎ করে ঘুম থেকে উঠে দেখছেন তার ক্রাইমটা কী ছিল।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শফিকুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনার অপরাধগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং কী পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে তা সামনে আসবে। ১৬ বিলিয়ন ডলার প্রতি বছর পাচার হয়েছে। এটা বাংলাদেশের মানুষের টাকা।” তিনি আরও বলেন, “ব্যাংকগুলো কীভাবে ডাকাতি হয়েছে আপনারা তো দেখেছেন। আমরা গুরুত্বের সাথে এটা তদন্ত করছি। তার সময়ে যত ধরনের চুরি হয়েছে, লুণ্ঠনতন্ত্র, চোরতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইতোমধ্যে একটা রিপোর্ট এসেছে তার পিয়ন যেটা আগে উনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ৪০০ কোটি টাকা। পরে আমরা দেখেছি সেখান ট্রানজেকশন হয়েছে ৬২৮ কোটি টাকা।”